প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: যেকোনো শিক্ষার্থীর জীবনে বৃত্তি পরীক্ষা এক অন্যরকম গুরুত্ব বহন করে। এটি শুধু একটি মেধা যাচাইয়ের পরীক্ষা নয়, বরং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি অনুপ্রেরণা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সারা দেশে ২০২৫ সালের সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)-এর মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছে।

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫

এই বছর বৃত্তি পরীক্ষায় শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারবে। আগামী ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই লেখায় আমরা প্রশ্নপত্রের কাঠামো এবং প্রতিটি বিষয়ের নম্বর বিভাজন বিস্তারিতভাবে তুলে ধরব, যা শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিকে আরও সহজ করে তুলবে।

এই আর্টিক্যালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ও যোগ্যতা। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ নম্বর বিভাজন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কাঠামো সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা তথ্য দেয়া হয়েছে।

বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫-এ মোট চারটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। নিচে বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিভাজন বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।

১. বাংলা (পূর্ণমান: ১০০)

প্রশ্ন নম্বর বিষয়বস্তু নম্বর
কবি ও কবিতার নামসহ কবিতার প্রথম ৮ পঙ্‌ক্তি লিখন ১০
শব্দার্থ লিখন (৫টি)
বাক্য গঠন (৫টি)
শূন্যস্থান পূরণকরণ (৫টি)
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর লিখন (৫টি)
বিপরীত শব্দ/সমার্থক শব্দ লিখন (৫টি)
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন (৪টি)
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন (৪টি) ১৫
কবিতা/গদ্য অনুচ্ছেদের মূলভাব লিখন
১০ ভাষারীতি পরিবর্তন/পদ নির্ণয়/ ক্রিয়ার কাল (৫টি)
১১ অনুচ্ছেদ পড়ে প্রশ্ন তৈরিকরণ/বিরামচিহ্ন প্রয়োগ (৫টি)
১২ যুক্তবর্ণ বিভাজন ও শব্দ গঠন (৫টি)
১৩ এককথায় প্রকাশ (৫টি)
১৪ ফরম পূরণকরণ/আবেদনপত্র লেখন
১৫ রচনা লেখন (সূত্রসহ/উন্মুক্ত) ১২

জেনে রাখো: প্রশ্নপত্রে ডোমেইনভিত্তিক (জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক, প্রয়োগমূলক এবং উচ্চতর দক্ষতামূলক) প্রশ্ন থাকবে।

২. ইংরেজি (পূর্ণমান: ১০০)

প্রশ্ন নম্বর বিষয়বস্তু নম্বর
মিলকরণ (Matching words)
বাক্য তৈরি (Making sentences)
সংক্ষিপ্ত উত্তর (৬টি প্রশ্ন, পাঠ্যবই থেকে) ১৮
শূন্যস্থান পূরণ (unseen passage)
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (unseen passage)
সংক্ষিপ্ত উত্তর (৫টি প্রশ্ন, unseen passage) ১৫
WH-Questions তৈরি (৬টি)
সাজিয়ে লেখা (Rearrange words/sentences)
Punctuation and Capitalization
১০ Form Fill-up/Fill in the blanks (date, numbers)
১১ সঠিক Verb-এর ব্যবহার
১২ ব্যক্তিগত চিঠি লেখা (Simple personal letter) ১০
১৩ রচনা লেখা (Short composition) ১০

জেনে রাখো: কোনো প্রশ্নের কোনো বিকল্প থাকবে না।

৩. গণিত (পূর্ণমান: ১০০)

প্রশ্ন নম্বর বিষয়বস্তু নম্বর
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন (১০টি) ১০
শূন্যস্থান পূরণ (১০টি) ১০
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন (১৬টি) ১৬
৪-১১ বিস্তারিত সমস্যা সমাধান (৮টি প্রশ্ন, ৮টির উত্তর দিতে হবে) ৬৪

এই ৮টি প্রশ্নের মধ্যে চার প্রক্রিয়া, লসাগু ও গসাগু, ভগ্নাংশ, গড়, শতকরা, পরিমাপ/জ্যামিতি এবং উপাত্ত বিন্যস্তকরণ-সম্পর্কিত সমস্যা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৪. প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (পূর্ণমান: ১০০)

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫-এর প্রশ্ন কাঠামো অনুযায়ী, ‘প্রাথমিক বিজ্ঞান’ এবং ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয় দুটিকে একত্রে একটি পরীক্ষা হিসেবে নেওয়া হবে। দুটি বিষয়ের জন্যই পূর্ণমান হবে ১০০, যেখানে প্রতিটি বিষয়ের জন্য বরাদ্দ থাকবে ৫০ নম্বর করে। সময় থাকবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।

বিষয়: প্রাথমিক বিজ্ঞান (মান: ৫০)

এই অংশের ৫০ নম্বরের জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নিচে নম্বর বিভাজনটি টেবিল আকারে দেওয়া হলো:

প্রশ্নের ধরন প্রশ্নের সংখ্যা প্রতিটি প্রশ্নের মান মোট নম্বর
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ৫টি
শূন্যস্থান পূরণ/সত্য-মিথ্যা/মিলকরণ ৫টি
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন ৮টি ১৬
বিস্তৃত উত্তর প্রশ্ন ৪টি ২৪

বিষয়: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (মান: ৫০)

প্রাথমিক বিজ্ঞানের মতো এই বিষয়েও মোট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এখানেও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক ও প্রয়োগমূলক প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর বিভাজনটি নিচে তুলে ধরা হলো:

প্রশ্নের ধরন প্রশ্নের সংখ্যা প্রতিটি প্রশ্নের মান মোট নম্বর
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ৫টি
শূন্যস্থান পূরণ/সত্য-মিথ্যা/মিলকরণ ৫টি
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন ৮টি ১৬
বিস্তৃত উত্তর প্রশ্ন ৪টি ২৪

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: প্রশ্নপত্রে জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক, প্রয়োগমূলক এবং উচ্চতর দক্ষতামূলক—এই চার ধরনের ডোমেইনভিত্তিক প্রশ্ন থাকবে।

 

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫-এর তারিখ এবং প্রশ্নপত্রের কাঠামো প্রকাশের ফলে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি এখন আরও সুনির্দিষ্ট হতে পারবে। যেহেতু ডিসেম্বরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তাই হাতে বেশ কিছুটা সময় আছে। এই সময়টিকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি বিষয়ের ওপর সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। আশা করি, প্রকাশিত এই তথ্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সঠিক দিকনির্দেশনা দেবে এবং তাদের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

সম্পর্কিত আর্টিকেলকত বছর বয়স পর্যন্ত অনার্সে ভর্তি হওয়া যায়: বিস্তারিত গাইড

Leave a Comment